আপনি যদি, ইউটিউবের চ্যানেল বানিয়ে টাকা আয় করার কথা ভাবছেন, তাহলে সর্ব প্রথমে আপনার “ইউটিউবের নতুন নিয়ম কানুন“, নীতিমালা, “monetization rules“, “YouTube কপিরাইট আইন (copyright rules)” এবং তার পলিসির (policy) বেপারে সবটাই জেনে নিতে হবে। এ নাহলে, আপনার ইউটিউব চ্যানেল সম্পূর্ণ ভাবে ডিলিট হয়ে যেতে পারে। এবং, টাকা কমানোর সব সুযোগ চিরকালের জন্য হারিয়ে ফেলার সম্ভাবনা অনেক যদি আপনি ইউটিউবের আইন কানুন (video policy) মেনে না চলেন। (YouTube channel rules & policy guideline).
যদি আপনার, ইউটিউব চ্যানেলের সাধারণ আইনের জ্ঞান না থাকে, তাহলে হয়তো আপনি আপনার চ্যানেল থেকে টাকা আয় করার সুযোগ পাবেননা। কারণ, ইউটিউব কোনোদিন এমন চ্যানেল বা ভিডিও তার কাছে রাখেনা যে, তার ধরা বাঁধা নিয়ম বা আইন না মেনেই YouTube এর ব্যবহার করছেন।
তাই, YouTube channel বানানোর আগেই, আপনি ভালো করে, “YouTube copyright আইন”, “নতুন নিয়ম”, YouTube এর পলিসি এবং monetization আইন (rules) এর বেপারে সম্পূর্ণ রূপে জেনে নিতে হবে। চিন্তা করবেননা, আমি আপনাদের সম্পূর্ণ টাই নিচে ভালো করে বলে দেব।
এতে আপনারা নিজের চ্যানেলে “policy violation“, “ভিডিওতে কপিরাইট strike” এবং “ভিডিও monetization” এর সাথে জড়িত সব রকমের সম্যসার থেকে চ্যানেলকে দূরে রাখতে পারবেন এবং কেবল নিজের কাজে মন দিতে পারবেন।
Also read –
তাহলে চলুন, এখন বেশি কথা না বাড়িয়ে নিচে আমরা ইউটিউব চ্যানেলের সবধরণের আইন (policy & rules) এবং টাকা আয় করা শুরু করার জন্য “monetization আইনের (video monetization rules) গুলির বেপারে জেনে নেই।
ইউটিউবের নতুন ৫ টি নিয়ম কানুন এবং আইন (YouTube rules & policy)
আগে YouTube এ এতটা কড়া আইন কখনোই ছিলোনা। কিন্তু, দিনে দিনে বেড়েযাওয়া “কপিরাইট সমস্যার” জন্য এবং “লো কোয়ালিটি (low quality) ভিডিও” সম্যসার জন্য এই কড়া (strict) আইন বের করতে YouTube বাদ্ধ হয়েছে।
এবং, এই ইউটিউবের নিয়ম বা আইনের জন্যই, আজ YouTube এ ভালো ভালো এবং high quality ভিডিও আপলোড হচ্ছে। এতে, অনেক advertiser (বিজ্ঞাপন চালক) রা ইউটিউবে বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য তাকে টাকা দিচ্ছেন এবং এতে আমরাও ইউটিউবের থেকে টাকা আয় করার সুযোগ পাচ্ছি।
তাই, এই নিয়ম বা পলিসি রুলস গুলি আমাদের জন্য, ইউটিউবের জন্য এবং তার advertiser দেড় জন্য সবের জন্য অনেক জরুরি এবং লাভদায়ক।
১. অন্যদের ভিডিও, ছবি, গান (audio) ব্যবহার করবেননা (copyright rules)
মন দিবেন, সব সময় নিজের বানানো অরিজিনাল ভিডিও ইউটিউবে আপলোড দিবেন। আপনি যদি, অন্য কারোর ভিডিও ইন্টারনেট থেকে নিয়ে নিজের চ্যানেলে আপলোড করেন, তাহলে আপনার চ্যানেলে copyright strike আসতে পারে। Copyright strike লাগাতার (পরে পরে) ৩ টি হলে আপনার সম্পূর্ণ চ্যানেল ইউটিউবের থেকে ডিলিট হয়ে যাবে। এর পর আপনি অন্য চ্যানেল বানাতে পারবেননা। একেই বলা হয় YouTube এর কপিরাইট পলিসি।
Copyright পলিসিকে ভালো করে বুঝুন
হে, আপনারা চাইলে অন্যদের ভিডিও দেখে তার থেকে আইডিয়া (idea), ধারণা (concept) বা জ্ঞান নিয়ে নিজের একটি আলাদা ভিডিও বানাতে পারেন। এতে, আপনার copyright violation এর কোনো ভয় থাকবেনা।
কিন্তু, সোজাসোজি অন্য কারো বানানো ভিডিও, ক্লিপ (clip) বা ভিডিওর কোনো অংশ আপনি ব্যবহার করতে পারবেননা।
যদি ব্যবহার করেন, তাহলে এইটা মনে রাখবেন, আপনি যার (copyright owner এর) ভিডিও, ক্লিপ বা কোনো ভিডিওর অংশ ব্যবহার করছেন সে আপনার চ্যানেলের ওপরে copyright claim করতে পারে।
ফলে, আপনার কপি করা ভিডিও গুলিতে ইউটিউবের দ্বারা copyright strike আসতে পারে। এবং, আমি যা আগে বলেছি, পর পর ৩ টি copyright strike চ্যানেলে আসলে আপনার চ্যানেল চির কালের জন্য ডিলিট (delete) করে দেয়া হবে।
আবার, অনেক সময় হয়তো আপনার আইনগত শাস্তি বা জুরমানা (penalty) ভরতে লাগতে পারে।
তাই, যা ভিডিও বানাবেন, তাতে কেবল নিজের কনটেন্ট (content) ব্যবহার করবেন।
ইন্টারনেটে থাকা অন্য কারোর ভিডিও, images, গান, ভয়েস (voice clip) বা কিছুই ব্যবহার করবেননা। কেবল, নিজের unique কনটেন্ট দ্বারা ভিডিও বানানোই আপনার আসল অগ্রাধিকার (priority) থাকতে হবে।
Image copyright (Royalty ফ্রি ছবি)
ভিডিওতে কোনো ধরণের ছবি, যেমন “thumbnail images” ব্যবহার করলে সেগুলি ইন্টারনেটে থাকা “Royalty free images website” থেকে ব্যবহার করবেন।
Royalty free ছবি জেকেও নিজের ওয়েবসাইটে, ব্লগে বা ভিডিওতে কোনো ভয় ছাড়া ব্যবহার করতে পারে। কারণ সেই ছবির কোনো মালিকানা অধিকার থাকেনা। অন্য ভাবে বললে royalty ফ্রী ছবি মানে copyright free ছবি। তাই, জেকেও সেগুলি ব্যবহার করতে পারেন।
কিছু royalty free images ওয়েবসাইটের নাম হলো – Pixabay এবং pexels. এগুলি সাইট থেকে আপনি নিজের ব্লগ বা ইউটিউবের চ্যানেল বা ভিডিওর জন্য ছবি ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারবেন।
আপনি যদি, গুগল থেকে বা অন্য ওয়েবসাইট থেকে ছবি ব্যবহার করেন, তাহলে আপনার ভিডিওতে copyright strike এসেযাবে। কারণ, সেই ছবিগুলোর আসল owner বা মালিক অন্য এবং আপনি তাদের ছবি এভাবে ব্যবহার করতে পারবেননা।
Copyright ফ্রী music বা audio
আমরা অনেক সময়, নিজের YouTube চ্যানেলের ভিডিও গুলিতে background music বা অডিও দিয়ে ভালো পাই।
কিন্তু, আপনি নিজের ভিডিওতে যেকোনো audio বা music ব্যবহার করতে পারবেননা। Royalty ফ্রি images এর মতোই আপনার Royalty free music নিজের ভিডিওতে ব্যবহার করতে হবে।
এতে, ভিডিওতে ব্যবহার করা audio গুলিতে কারো মালিকানা অধিকার থাকবেনা এবং তাই কেও আপনার ভিডিওতে copyright claim করার সুযোগ পাবেনা।
নিজের ইউটিউবের ভিডিও গুলির জন্য আপনারা Royalty free audio অনেক ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন। কেবল Google এ “Royalty free music” লিখে সার্চ করলেই হলো।
এর বাইরেও আপনারা “YouTube এর audio library” থেকে music বা audio ডাউনলোড করে নিজের ভিডিওতে ব্যবহার করতে পারবেন।
২. ভিডিও অতিরিক্ত শেয়ার করবেননা
দেখা গেছে যে, আপনি যদি ইউটিউবের ভিডিও অনেক বেশি ভাবে শেয়ার করেন, তাহলে ইউটিউব আপনার ভিডিওতে monetization disable করেদিতে পারে। এতে, আপনার টাকা কমানোর রাস্তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
কারণ, ইউটিউব organic search traffic বেশি পছন্দ করে যেগুলি আমরা গুগল সার্চ বা ইউটিউবের ভিডিও সার্চ থেকে পায়।
এবং, ফেসবুক, টুইটার বা অন্য কোনো সোশ্যাল মিডিয়া সাইট থেকে আশা ভিউ বা ট্রাফিক ইউটিউব পছন্দ করেনা।
তাই, চেষ্টা করবেন যাতে আপনার ভিডিও গুলিতে সবচে বেশি ভিউ গুগল সার্চ বা ইউটিউবের সার্চ থেকে হোক।
নিজের ভিডিও, সোশ্যাল মিডিয়া সাইট গুলিতে অল্প স্বল্প শেয়ার অবশই করবেন কিন্তু অতিরিক্ত শেয়ার আপনার চ্যানেলের জন্য অনেক ক্ষতিকারক হতে পারে।
৩. ভিডিও Nudity and sexual content policies
আপনার আপলোড করা ভিডিওতে কোনোরকমের NUDITY (অশ্লীলতা) থাকতে পারবেনা। অশ্লীল ভিডিও বা ছবি থাকলে সে ভিডিও ইউটুব কোনোদিন মেনে নিবেন এবং আপনার চ্যানেল BLOCK বা DELETE হয়ে যেতে পারে।
৪. Hacking (হ্যাকিং) এর সাথে জড়িত ভিডিও
হ্যাকিং বা এরকম ধরণের কোনো ভিডিও আপনি বানাতে পারবেননা যেখানে হ্যাকিং এর ব্যাপারে বলা হচ্ছে বা শিখানো হচ্ছে।
৫. Low quality ভিডিও বানাবেননা
ইউটিউব তার ইউসার দেড় ভালো এবং কামে আশা ভিডিও দেখাতে চায়। এবং তাই, যদি আপনার ভিডিওতে কোনো ধরনের কাজের জিনিস নেই বা সে low quality র তাহলে তাতে বিজ্ঞাপন দেখানো হবেনা। এতে, আপনার আয় করার সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাবে।
তাই, সব সময় এমন ভিডিও বানাবেন যেগুলি লোকেরা দেখে ভালো পান , যেগুলিতে কাজের জিনিস থাকে এবং যেগুলির থেকে লোকেরা অনেক কিছু শিখতে পারে।
এমন ভিডিও, যেগুলিতে কাজের অনেক কিছু শিক্ষা যায় এবং লোকেরা দেখে ভালো পান, সেগুলিকে High quality ভিডিও বলে। এবং, এমন ভিডিও ইউটিউব অনেক ভালো পায়।
ইউটিউবের নতুন monetization আইন এবং নিয়ম
নিজের ইউটিউবের চ্যানেল থেকে টাকা আয় করার জন্য আপনার Channel monetization চালু করতে হবে।
কিন্তু দাঁড়ান,
YouTube চ্যানেলে টাকা আয় করা চালু করার জন্য আলাদা ভাবে কিছু নিয়ম কানুন মানতে হবে। এবং, এই আলাদা নিয়ম কানুন গুলিকে বলা হয়, “YouTube monetization rules”.
সব ধরনেক monetization এর আইন মানার পর, আপনার চ্যানেল ইউটিউবের কর্মচারীরা manually চেক করে দেখবেন।
এবং, তারপর আপনার চ্যানেলে যদি সব ঠিক থাকে, ইউটিউবের সব নিয়ম যদি আপনি মেনেছেন, তাহলে তারা আপনার চ্যানেলে monetization enable বা চালু করে দিবে।
তারপর, আপনি নিজের ভিডিওতে, Google এডসেন্স এর দ্বারা দেখানো বিজ্ঞাপন দ্বারা টাকা আয় করতে পারবেন।
ইউটিউব monetization rules ২০১৯
- চ্যানেলে টাকা আয় করা শুরু করার জন্য, আপনার সর্ব প্রথমে লাগবে ৪০০০ ঘন্টার watch hours. ১২ মাসের ভেতরে আপনার সব ভিডিও মিলিয়ে লোকেরা যাতে মোট ৪০০০ ঘন্টা আপনার ভিডিও দেখেন। সেই, ৪০০০ ঘন্টা ভিউ আপনার একটি ভিডিওতে হতে পারে বা সব ভিডিও মিলিয়েও হতে পারে।
- ১২ মাসের ভেতরে আপনার টোটাল ১০০০ সাবস্ক্রাইবার (subscriber) হয়ে যেতে হবে।
আমি ওপরে বলা শর্ত গুলি আপনি যাওয়া ১২ মাসের ভেতরে পুরা করলে, YouTube নিজেই আপনার চ্যানেল রিভিউ করবে।
এবং আপনি যদি ইউটিউবের সবধরণের policy, নিয়ম এবং আইন মেনেছেন, তাহলে আপনার চ্যানেলে monetization চালু করে দেয়া হবে।
আমাদের শেষ কথা,
তাহলে বন্ধুরা, আশা করি আপনি আপনাদের সব ধরণের ইউটিউবের আইন, নিয়ম এবং monetization rules বুঝিয়ে বলতে পেরেছি। এই, নিয়ম কানুন গুলি আপনারা ভালো করে মেনে চললে, আপনারা YouTube চ্যানেল দ্বারা অনেক টাকা আয় করতে পারবেন এবং আপনাদের কোনো রকমের সম্মস্যার সম্মুখীন হতে হবেনা।
Also read –
0 মন্তব্যসমূহ